বিজ্ঞানের জন্য

 


এক জলপ্রপাতেই দেখা যায় ৭ রং

প্রকৃতি কতটা বিচিত্র, তার নিদর্শন কম-বেশি দেখেছেন। পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখে হয়তো এক জীবনে শেষ করা যাবে না। তবে যা সুন্দর; তা কিন্তু কষ্টসাধ্যও বটে!

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে হয়তো আপনি জলপ্রপাত দেখেছেন! তবে কখনো কি এমন কোনো জলপ্রপাত দেখেছেন, যেটা রংধনুর মতো ৭ রঙের। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, রং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে।

আপনারা হয়তো জানেন, অ্যান্টার্কটিকায় রয়েছে ব্লাড ফলস নামক জলপ্রপাত। চারপাশে সাদা বরফের পাহাড়ের মাঝ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে রক্তপ্রপাত। এ বিস্ময়কর দৃশ্য দেখতে অনেক মানুষ সেখানে ভিড় জমান।

ঠিক তেমনই কলোম্বিয়ায় রয়েছে ৭ রঙা জলপ্রপাত। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর এ জলপ্রপাতে সবার মন কেড়ে নেয়। এ বৈশিষ্ট্যের জন্যই একে ‘রিভার অব কালার’ বা ‘লিকুইড রেইনবো’ বলা হয়। তবে সব সময় এমন রূপ দেখা যায় না।

শুধু বর্ষা মৌসুমে গেলেই পর্যটকরা জলপ্রপাতের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ ৫ মাস এ সৌন্দর্য দেখতে পান পর্যটকরা। স্থানীয়দের বর্ণনা অনুসারে, ঝড়-বৃষ্টির পরে জলপ্রপাতের আশেপাশে গেলে এর প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

জলপ্রপাতটি দেখলে মনে হবে যেন স্বর্গ নেমেছে পৃথিবীতে। জলপ্রপাতটি অবস্থিত কলম্বিয়ার ক্যানো ক্রিস্টালসে। এর চারপাশে পাখির কিচির-মিচির আর বন্যপ্রাণির ডাক জীবন্ত করে রেখেছে জলপ্রপাতকে।

পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া জলপ্রপাতটি বয়ে গেছে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বছরের অন্যান্য সময় এটি স্বাভাবিক থাকলেও বর্ষাকালে এর রূপ পরিবর্তন হয়। এর তলদেশের লাল লতা-গুল্ম ও অন্যান্য তরল পদার্থ স্রোতে দুলতে থাকে।

জলপ্রপাতের পানি এতটাই স্বচ্ছ যে, নিচে থাকা পাথরের গায়ের শ্যাওলা, হলুদ বালি, কালো পাথর সবই দেখা যায়। আর এসব একসঙ্গে মিলেমিশে রংধনুর মতো বিভিন্ন রং ধারণ করে।

জানা যায়, এতে থাকা পাথরগুলোর বয়স ১২০০ মিলিয়ন বছরেরও বেশি। এ কারণে পাথরগুলো ধূসর থেকে কালো রং ধারণ করেছে। তবে এ রং প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়েছে।

তবে একা একা এখানে পৌঁছাতে পারবেন না। গাইড নিয়ে পাহাড়, টিলা পেরিয়ে সেখানে যেতে হয় অপূর্ব দৃশ্য দেখতে। জলপ্রপাতের সৌন্দর্যের কারণে কলম্বিয়া সরকার স্থানটিকে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।


Post a Comment

Previous Post Next Post