বিজ্ঞানের জন্য

করোনাভাইরসে সংক্রমনরোধে দীর্ঘ দুই মাসের বেশী সময় বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হতে যাচ্ছে ট্রেন চলাচল। আগামী ৩১ মে রবিবার থেকে সারাদেশে বিভিন্ন রুটে চলাচল করবে যাত্রীবাহী আন্তনগর ট্রেন। তবে দীর্ঘ ৬৮ দিন চট্টগ্রাম -চাদপুর রুটে মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু করবে ৩ জুন বুধবার থেকে।

যার ফলে দীর্ঘ ৬৮ দিন পর চলন্ত ট্রেন দেখতে চলেছে শাহতলী তথা চাঁদপুর বাসী। চট্টগ্রাম - চাঁদপুর রুটে চলাচল কারী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন টি আজ বিকেলে চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং যেটি রাতে চাঁদপুরে পৌছানোর কথা রয়েছে।

তবে ভ্রমনে মানতে হবে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি। ট্রেনে টিকেট বুকিং করতে হবে অনলাইনে। প্রতি দুই সিটে একজন যাত্রী ভ্রমন করকে পারবে । রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, দুটি গ্রুপে ভাগ করে ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে প্রথমে ‘ক’ গ্রুপে রাখা ট্রেনগুলো ৩১ মে থেকে পরিচালনা করেছে।

এই ট্রেনগুলো হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, ঢাকা-সিলেট রুটে কালনী এক্সপ্রেস, ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন রুটে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, ঢাকা-রাজশাহী রুটে বনলতা এক্সপ্রেস, ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে লালমনি এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন/পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-খুলনা রুটে চিত্রা এক্সপ্রেস।

আর ‘খ’গ্রুপে রাখা ট্রেনগুলো ৩ জুন থেকে পরিচালনা করতে সুপারিশ করা হয়েছে। এই ট্রেনগুলো হচ্ছে- ঢাকা দেওয়ানগঞ্জবাজার রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস, ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস, ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নীলসাগর এক্সপ্রেস, খুলনা-চিলাহাটি রুটে রূপসা এক্সপ্রেস, খুলনা-রাজশাহী রুটে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, রাজশাহী-গোয়ালন্দ ঘাট রুটে মধুমতি এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে মেঘনা এক্সপ্রেস, ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-নোয়াখালী রুটে উপকূল এক্সপ্রেস।

রেলপথে যাত্রী পরিবহনে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে: ১. স্টেশনগুলোতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম সংরক্ষণ, ২. জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন ৩. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্র স্থাপন ৪. প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহি নিশ্চিত করা ৫. রেলওয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা

৬. রেলকর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা ৭. অসুস্থতা অনুভবকারীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া ৮. তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জাম স্টেশনগুলোর প্রবেশপথে স্থাপন করা ৯. স্টেশনে আগত সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা

১০. যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকবে তাদের ওই এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।

১১. ট্রেনে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি ১২. সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাত্রায় চালানো এবং বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা। সব এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাস বন্ধ রাখতে হবে। ১৩. জনসাধারণের ব্যবহারের স্থানগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে ।

১৪. টয়লেটগুলোতে তরল সাবান থাকতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হাত জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে। ১৫. যাত্রীদের অপেক্ষা করার জন্য ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

১৬. প্রতিটি ট্রেন যাত্রা শুরুর আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ১৭. প্রতিটি ট্রেনে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে। যেখানে সন্দেহজনক উপসর্গ আছে এমন যাত্রীদের অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখা যাবে। ১৮. যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে।

১৯. সারিবদ্ধভাবে ওঠানামার সময়ে যাত্রীদের পরস্পর থেকে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। ২০. যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। মাস্ক পরতে হবে এবং হাতের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে।

২১. প্রত্যেক যাত্রী এবং রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢেকে নিতে হবে। ২২. পোস্টার ও ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করতে হবে।

২৩. মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা ট্রেনে টিকিটের মাধ্যমে যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে। ২৪. যদি করোনা রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত ২৫ মার্চ থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে মালবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post