বিজ্ঞানের জন্য

শুরেতেই স্বাগত জানাই যারা সেচ্ছায় মাথা ন্যাড়া করেছেন।
মাথা ন্যাড়া করার কথা একটা সময় শুনলেই অনেকেই নাক সিটকাতো। মাথা ন্যাড়া করার প্রথম এক দুইমাস বন্ধুসমাজে বা আত্বীয়স্বজনদের সামনে চলতে কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ালাগতো।  কিন্তু ‘করোনা' সেটিকে অনেকটাই স্বাভাবিক করে দিয়েছে।
তানভীর পাটওয়ারী

সারাবিশ্বে এখন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর ভয়াবহতা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশেও এর তীব্রতা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

ইতোমধ্যে চাঁদপুর জেলা লকডাউন করা হয়েছে। মরণব্যাধি ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মানুষ সবসময় মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করছে।
হোম কোয়ারান্টাইনের এই সুযোগে শাহতলী ও এর আশেপাশের অনেককেই মাথা ন্যাড়া করতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যে অনেকেই একসাথে মাথা ন্যাড়া করে তাদের ব্যক্তিগত ও গ্রুপ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোডও দিয়েছেন, আবার দেখাগেছে অনেকই কমেন্ট করে তাদেরকে আগ্রহ ও উৎসাহ দিয়েছেন। এটি সত্যিসত্যিই একটি ভালো উদ্যোগ।
চলুন এবার জেনে নিন,মাথা ন্যাড়া করার অজানা দশটি উপকারীতাঃ-
১) যারা চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন। তাদেরকে বলছি, আপনার মাথায় কি খুশিকীর উপদ্রব আছে?
আপনার মাথার ত্বক কি তেলতেলে ভাব থাকে?
তাহলে আজই আপনার মাথা ন্যাড়া করুন।
তারপর প্রয়োজনে ডাক্তার দেখান।
যারা চুল পড়া সমস্যায় ভুগেন, তাদের মাথা টাক হওয়ার পেছনে প্রধান এবং একমাত্র কারন খুশিকী!!! এই খুশিকীর কারনেই আপনার মাথায় চুল টিকতে পারেনা। এই খুশিকী যতদিন আপনার মাথায় আছে,ততদিন কোন দূর্বল চুল আপনার মাথায় টিকতে পারবেনা।
আর এই খুশিকী আপনি হাজারো চেস্টা করেও পুরোপুরিভাবে পরিস্কার করতে পারবেন না।
তাই এক্ষেত্রে মাথা ন্যাড়া করার বিকল্প নেই।

২) অনেক ডাক্তার বলে থাকে যে, চুল পড়া সমস্যায় মাথা ন্যাড়া করে তেমন কোন উপকারীতা নেই।
প্রকৃতপক্ষে এই কথা যারা বলে, তারা পুরোপুরিভাবে নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করে বলে।
মাথা ন্যাড়া করার ফলে প্রথমত খুশিকী পুরোপুরিভাবে দূর হবে, দ্বিতীয়ত চুলের সকল ইনফেকশন ঘা দূর হবে। তৃতীয়ত, খুশিকীর কারনে অনেক চুল গজাতে পারেনা। মাথা ন্যাড়া করার ফলে সেইসকল চুল পুনরায় উজ্জীবিত হবে।
যাদের বংশে টাক সমস্যা আছে, তারা যদি অন্তত ২ বছর অন্তর অন্তর মাথা ন্যাড়া হয়,তবে এই সমস্যা থেকে অনেকাংশে রক্ষা পেতে পারে।

৩) অনেকের মতে বার বার মাথা ন্যাড়া করলে চুলের ফলিকে সমস্যা হয়। হ্যাঁ ঠিক। কিন্তু এটা শুধুমাত্র বাচ্চাদের হয়। যারা চুলের নতুন স্টাইল দিতে চাচ্ছেন বা চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য মাথা ন্যাড়া করা খুবই উপকারী।
যাদের সবেমাত্র চুপ পড়া শুরু হয়েছে, তারা ডাক্তার দেখানোর পর, চিকিৎসা করার শুরুতেই মাথা ন্যাড়া করে চিকিৎসা করুন। তাহলে অনেক ভালো উপকার পাবেন।

৪) যারা চুল পড়া বা টাক সমস্যায় ভুগছেন, তাদের অনেকে আবার মাথা ন্যাড়া করার ১০-১৫ দিন পর পুনরায় মাথা ন্যাড়া করে থাকে। এই পদ্ধতি অনেক ক্ষেত্রে বৃথা।
কারন আপনি যখন প্রথম বার মাথা ন্যাড়া করবেন,তখন একাধিকবার চাছবেন। তাহলেই চলবে।

৫) মাথা ন্যাড়া করলে মস্তিস্কের জন্য অনেক উপকারী দিক আছে। আপনার চুল পড়া বা অন্যন্যা সমস্যা না থাকলেও আপনি মাথা ন্যাড়া করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রথমত মাথা ন্যাড়া করলে আপনার যৌণ শক্তি বাড়বে, দ্বিতীয়ত আপনার চিন্তাশক্তি আগের তুলনায় তীক্ষ্ণ হবে।

৬) যাদের ঘুম অনেক বেশি হয় বা যাদের মধ্যে অলসতা অনেক বেশি, তারা যদি মাথা ন্যাড়া করে তবে তাদের এই দুটি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।

৭) যাদের বংশে টাক আছে, তারা মাথা ন্যাড়া করার পর প্রতিদিন মাথায় সরাসরি ক্যাস্টর অয়েল দিবেন।
মনে রাখবেন চুল গজানোর ক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েলের উপর কিছুই নেই। এই ক্যাস্টর অয়েল যেকোন বড় ডিপার্টমেন্ট সপ বা কসমেটিকস দোকানে পাবেন। দাম পড়বে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা।

৮) মাথা ন্যাড়া করার পর সম্ভব হলে একবার মাথায় মেহেদি পাতা বেটে দিবেন। কারন মেহেদি পাতা মাথার চুলের গোড়ার সকল ইনফেকশন দূর করবে।
যাদের চুল পড়া বা টাক সমস্যা আছে তাদের জন্য এই কৌশল।

৯) চুল পড়ার যত ধরনের ঔষধ আছে, প্রতিটি ঔষধের মারাত্বক সাইড ইফেক্ট আছে। যেমনঃ চুল পড়ার জন্য বাজারে ফার্মেসিতে যে স্প্রে পাওয়া যায় সেটি ব্যাবহারে আপনার যৌন শক্তি লোপ পাবে।
তারপর চুপ পড়া চিকিৎসায় পিআরপি করা হলে, আপনার শরীরে এলার্জির সকস্যার পাশাপাশি আপনি সন্তান ধারনে অক্ষম হয়ে যেতে পারেন।
তাই চিকিৎসা না করে চুল পড়া বা টাক সমস্যাকে মেনে নিন। বিশ্বে তথা ব্যাংলাদেশে বেশিরভাগ সফল ও বিখ্যাত ব্যাক্তিদের মাথায় চুল নেই।
চুল পড়া রোগের সঠিক চিকিৎসা আবিস্কার করতে কেউ পারেনা এমন কিন্তু নয়। চুল পড়ার চিকিৎসা করতে গেলে শরীরে অন্য কোন ক্ষেত্রে আপনার মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। তাই চুলপড়ার চিকিৎসা না করাই শ্রেয়।

১০) ডাক্তারি চিকিৎসা বাদে চুল পড়ার সর্বোত্তর চিকিৎসা থেকে থাকলে সেটি হলো মাথা ন্যাড়া করা। আপনার চুলের গ্রোথ যতই কম হোক ন কেন, সম্পূর্ন চুল গজাতে ২ মাসের বেশি লাগবেনা।

যারা মাথা ন্যড়া করার কথা শুনলেই নাক সিটকাতেন তারা যদি মাথা ন্যাড়া করার এই উপাকারীতা গুলো আগে জানতো তাহলে হয়তবা তারা মাথা ন্যাড়া করার জন্য আমাদের আগেই আগ্রহ দেখাতে বাধ্য হতেন।

তবে ইসলামী বিধান অনুসারে মহিলারা বিনা ওজরে মাথা ন্যাড়া করতে পারবেন না।
ntvর নিয়মিত আয়োজন নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ১৮২৩তম পর্বে ইমেইলের মাধ্যমে ডা. সাবিয়া ইয়াসমিন তানিয়া মহিলাদের মাথা ন্যাড়া করা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। 

প্রশ্ন : আমরা জানি যে মহিলাদের মাথা ন্যাড়া করা গুনাহ। কেমন গুনাহ, কবিরা নাকি ছগিরা। আর কোনো কারণে মহিলা যদি মাথা ন্যাড়া করতে চায় যেমন ধরুন প্রচুর চুল, পরে চুল একেবারে পাতলা হয়ে যাচ্ছে  বা উকুন হলে যখন কিছুতেই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, তখন কি মাথা ন্যাড়া করা যাবে?

উত্তর : মহিলাদের জন্য চুল ন্যাড়া করা বা সম্পূর্ণ কামিয়ে ফেলা হারাম বা কবিরা গুনাহ, যেহেতু রাসুল (সা.) এ কাজ নিষেধ করেছেন। কিন্তু কারো যদি ওজর থাকে, মানে অসুস্থতা থাকে এবং সেটা যদি ডাক্তার বলেন যে, আপনি যদি চুল কামিয়ে ফেলেন তাহলে চিকিৎসা হতে পারে, তাহলে সেক্ষেত্রে তার জন্য হয়তো ওজরের কারণে বা তাঁর অসুস্থতার কারণে জায়েজ হতে পারে। তবে রাসুল (সা.) এটা নিষেধ করেছেন।

আমাদের এই আর্টিকেল'টি ভালো লাগলে শেয়ার করার পাশাপাশি নিচে কমেন্ট বক্সে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে ভুলবেন না।

স্বপ্নদ্রষ্টা
এম.এ.শাকুর

Post a Comment

Previous Post Next Post