বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু লেক এটি। যার উচ্চতা ১৭ হাজার ৮০০ ফুট বা ৫ হাজার ৪৩০ মিটার। এর অবস্থান ভারতের সিকিমে। বৌদ্ধ, শিখ এবং হিন্দুদের পবিত্র স্থান এটি।
যে পর্বতের উপরে এ লেকের অবস্থান, তার নাম গুরুডংমার। এর নামকরণ করা হয়েছে গুরু পদ্মসম্বভের নামে। যিনি বৌদ্ধধর্মের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাতা।
লেকটি সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক থেকে ১৯০ কিলোমিটার বা ১২০ মাইল দূরে এবং উত্তর সিকিম জেলার তিব্বত (চীনা) সীমান্তের প্রায় ৫ কিলোমিটার বা ৩.১ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত।
বছরের প্রায় ৬ মাসই গুরুডংমার লেকটি বরফাবৃত থাকে। লেকটি কাঞ্চনজঙ্ঘা সীমার উত্তরে তিব্বত মালভূমির সঙ্গে সংযুক্ত একটি উঁচু মালভূমি অঞ্চলে অবস্থিত।
বছরের নভেম্বর থেকে মধ্য মে পর্যন্ত শীতের মাসগুলোয় লেকটি সম্পূর্ণ হিমশীতল থাকে। তবে রহস্যময় বিষয় হলো, এ সময় পুরো লেকটি বরফাবৃত থাকলেও এর একটি অংশের পানি কখনোই শুকায় না। আর সেখানকার পানি একেবারেই বিশুদ্ধ।
লেকটির আয়তন ১১৮ হেক্টর বা ২৯০ একর এবং এর পেরিফেরিয়াল দৈর্ঘ ৫.৩৪ কিলোমিটার বা ৩.৩২ মাইল। লেকের চারপাশের অঞ্চলটিও গুরুডংমার নামেই পরিচিত। সেখানে ইয়াকস, নীল ভেড়া এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণি বসবাস করে।
স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, তাদের পানির কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে বৌদ্ধ তান্ত্রিক গুরু পদ্মসম্ভব বরফাবৃত লেকটির ওই অংশ ছুঁয়ে দিয়েছিলেন। তখন থেকেই লেকটিকে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভক্তরা এর পবিত্র পানি পাত্রে বহন করে নিয়ে যান।
গুরুডংমার যেতে হলে রাত কাটাতে হবে লাচেনে। সেখানে সব সময়ই শীত থাকে। এজন্য গরম জামাকাপড় নিতে ভুলবেন না। গ্যাংটক থেকে লাচেনের দূরত্ব ১১০ কিলোমিটারের মতো। সময় লাগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা।
পুরো রাস্তায় নাম না জানা অসংখ্য পাহাড়ি জঙ্গল। ঘিরে রয়েছে বরফি পাহাড়। রাস্তার প্রতিটি বাঁকে সঙ্গী তিস্তা। যেহেতু গুরুডংমার লেকটির উচ্চতা অনেক। তাই পর্বত আরোহনের সময় অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে পারে।
এজন্য সেখানে যাওয়ার সময় শ্বাসকষ্টের প্রয়োজনীয় ওষুধ আনতে ভুলবেন না। এ ছাড়াও ক্ষুধা মেটানোর জন্য সঙ্গে চকলেট আর পপকর্ন নিতে পারেন। পারলে কিছুটা কর্পুর নিয়ে যাবেন। শ্বাসকষ্টে হলে আরাম পাবেন।
বিশেষ কথা হচ্ছে, ভারতীয় পর্যটকদের জন্য এ লেকে যাওয়ার অনুমতি মিললেও বিদেশিদের ক্ষেত্রে দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি নিতে হয়।
Post a Comment