বিজ্ঞানের জন্য

হিরোশিমা! মানব ইতিহাসের কলঙ্কতম এক অধ্যায়ের নাম। জাপানের এই নগরীতেই ফাটানো হয় প্রথম পারমাণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। যুক্তরাষ্ট্রের সেই আক্রমণে প্রাণ গিয়েছিল লক্ষাধিক মানুষের, আহত লাখ লাখ। আজ ৬ আগস্ট সেই ধ্বংসযজ্ঞের ৭৫ বছর পূর্ণ করল হিরোশিমা।

১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট ওই পারমাণবিক বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৪০ লাখ মানুষের। এদের অনেকের মৃত্যু হয়েছিল সঙ্গে সঙ্গে। মৃত্যুর এই ধারা অব্যাহত ছিল কয়েক মাস জুড়ে। যারা বেঁচে ছিলেন, বিকিরণের কারণে নানা ধরনের অসুস্থতায় ছিল দুঃসহ যন্ত্রণা।

হিরোশিমার শোকের তিন দিন পর আবার নাগাসাকিতে আরও একটি পারমাণবিক বোমা ফাটায় যুক্তরাষ্ট্র। ‘ফ্যাট ম্যান’ নামক ওই বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় আরও ৭৪ হাজার মানুষের। মার্কিনিদের জোড়া পারমাণবিক বোমা হামলার পরই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে জাপান।

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি স্মরণ করছে জাপান। সেই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া, আহত, নিহতদের আত্মীয়স্বজন বিদেশি প্রতিনিধিরা এসবে অংশগ্রহণ করছেন। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করার পাশাপাশি বিশ্ব শান্তির ডাক দিয়েছেন তারা।

তবে করোনার কারণে এবার হিরোশিমা দিবসে হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে জনসমাগমে অনুমতি দেওয়া হয়নি। দিবসের সব আয়োজন অনলাইনে সম্প্রচার করা হচ্ছে। আর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন তাদের সবাই ছিলেন মাস্ক পরিহিত।

দিবসটি উপলক্ষে হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই অতি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তার মতে, অতি জাতীয়তাবাদের কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাতসুই।

“এমন দুঃসহ অতীতের পুনরাবৃত্তি আমরা হতে দিতে পারি না। সভ্য সমাজকে অবশ্যই আত্মকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদিতা পরিত্যাগ করতে হবে এবং সকল হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরস- “পারমাণবিক ঝুঁকি একেবারে দূরীকরণ করার একমাত্র উপায় পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্ত করা।”

Post a Comment

Previous Post Next Post