বিজ্ঞানের জন্য

একটিমাত্র জিনিসই হয়তো মানুষের থেকে আশা করা যায় যা অন্য পশুপাখীদের থেকে নয়। তাহ মানবিকতা। কিন্তু আজ সেই জিনিসটাও মানুষের মধ্যে নেই, মানবতা আজ মৃত তা প্রমাণ করেছে মানুষই।
ভেলিয়ারি নদীতে মৃত্যুর অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকা নিশ্চল হাতি।
 ছবি সৌজন্য: ফেসবুক/মোহন কৃষ্ণন
বিস্ফোরক ভর্তি আনারস খেয়ে মৃত সন্তানসম্ভবা হাতি (Pregnant elephant Death)। অমানবিক এই ঘটনার রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই ফের একইভাবে এক হস্তিনীর মৃত্যু ঘিরে ফের কাঠগড়ায় কেরল।

কেরলে গর্ভবতী হাতিকে যেভাবে খুন করা হয়েছে তা নিয়ে দুটো কথা বলতে গেলেও চোখ থেকে পানি বেরোবে। মানুষ কতটা নৃশংস হতে পারে তার প্রমাণ রেখেছে এই ঘটনা। শুধুমাত্র ওই অবলা হাতিকে নয়, এই ঘটনা খুন করেছে মানুষের মনুষ্যত্বকে।

খাবার খুঁজতে গিয়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়েছিল গর্ভবতী ওই হাতিটি। তাকে খাবার অবশ্য দেওয়া হল, কিন্তু খাবারের মধ্যে বাজি ঢুকিয়ে দেওয়া হল। চিবানোর সময় মুখের মধ্যেই তা ফেটে গেল। অসহ্য যন্ত্রণায় হয়তো অনেক কিছু বলতে চেয়েছিল গর্ভবতী মা। কিন্তু পারেনি। নদীর পানিতে দাঁড়িয়ে থেকেই নিজের মৃত্যু বরণ করতে বাধ্য হল সে।

গত বুধবারের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে যখন উত্তর কেরালার মালাপ্পুরম জেলার বনবিভাগের এক আধিকারিক সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বীভৎস মৃত্যুর বর্ণনা দেন।

বনবিভাগের আধিকারিক মোহন কৃষ্ণন লিখেছেন, “সবাইকে বিশ্বাস করত সে। যখন তার মুখের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে, তখনও সে নিশ্চয়ই নিজের কথা ভাবে নি, ভেবেছে সেই সন্তানের কথা, যার জন্ম হওয়ার কথা ছিল ১৮ থেকে ২০ মাস পর।” হাতিটিকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে যে র‍্যাপিড রেসপন্স টিম ঘটনাস্থলে যায়, তারই সদস্য ছিলেন কৃষ্ণন।

হাতিটিকে যখন উদ্ধার করা হল তখন দেখা গেল তার চোয়াল সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। মুখের অবস্থাও ব্যক্ত করার মতো নয়। এমন অসহনীয় যন্ত্রণায় সে ভুগেছে যে, নদীর পানিতে একভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি।

খাবারের খোঁজে বেরিয়ে আসা এই মা হয়তো কখনো ভাবেনি বাকি দুনিয়াটা স্বার্থপর মানুষে ভরপুর। শুধু স্বার্থপর বলা ভুল হবে নৃশংস, অত্যাচারী এবং অমানবিক। দুটো খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিল সে। যারা তাকে বাজি মিশিয়ে খাবার দিয়েছে তাদের থেকে খাবার পেয়েও হয়তো আশীর্বাদই করেছিল। কিন্তু যতক্ষণে সে এই নৃশংস পিশাচগুলো আসল রুপ জানতে পারল ততক্ষণে সবশেষ।

Post a Comment

Previous Post Next Post